ভাল খেজুর চেনার উপায়

 আমার চা পাতা নিয়ে করা পোষ্টে আপনারা বেশ আগ্রহ নিয়ে কমেন্ট করেছেন। সাধারণ একটা ব্লগপোস্টে এত কমেন্ট পেয়ে মনে বেশ আনন্দ পেয়েছি। তাই ভাবলাম এরকম আরেকটি পোষ্ট লিখি। আজ লিখবো খেজুর চেনার উপায় নিয়ে। প্রথমে আমার পছন্দের আজওয়া খেজুর নিয়ে কথা হবে। এরপর সময় করে ধীরে ধীরে অন্য খেজুর নিয়ে কথা এই পোস্টে যোগ করতে থাকবো। 


আজওয়া খেজুর মূলত কাল কুচকুচে এবং অন্য খেজুরের তুলনায় আকারে ছোট। লালচে ভাব, ভেজা ভেজা, আকারে বেশি ছোট এগুলোর যেকোনো একটি লক্ষণ দেখলে বুঝবেন এটি নিম্নমানের আজওয়া। যতবেশি কাল হবে ততবেশি মানসম্পন্ন বলা চলে। তবে খেজুরের বোটা লালচে ভাব থাকবে।  অনেক আগের মজুদ করা খেজুরে ভেজা ভেজা ভাব চলে আসে। ফ্রেশ টাটকা খেজুর হবে শুকনা ভাবের। গ্রেড ১ আজওয়া খেজুর হবে সাইজে বড়।  




চিত্রের আজওয়া খেজুর লক্ষ্য করুন। কালোর মধ্যে লালচে ভাব। এটা বি- গ্রেড আযওয়া। এগুলো মদিনার না।

তবে মদিনা, মদিনার বাইরের একি গ্রেডের খেজুরের তফাত খুবই সূক্ষ্ম। 




এবার এই চিত্রটি দেখুন। এটিও লালচে। দুটো ছবি একসাথে দেখলে বুঝবেন যে দ্বিতীয় ছবিটির খেজুরে কুচানোভাব কম। দ্বিতীয় ছবির এগুলো হচ্ছে সি গ্রেড আজওয়া। 



শেষের ছবিটার খেজুরগুলোতে দেখুন কুচানোভাব বাকি ছবিরগুলোর থেকে বেশি। এটা হচ্ছে এ গ্রেড আজওয়া। এটা মদিনার কাছাকাছি অঞ্চলে উৎপন্ন আজওয়া খেজুর। 



এ গ্রেডের থেকেও ভাল আজওয়া হয়?

-হয়। এর উপরের আজওয়াকে এ+ গ্রেড আজওয়া বলে। এটাকে প্রিমিয়াম আজওয়া বলা যায়। চলুন আগে ছবি দেখি। 


 

এ+ গ্রেড আজওয়ায় দেখুন লালচে ভাবটা এ গ্রেডের থেকেও কম। এই গ্রেডগুলোরও আবার মিডিয়াম আর লার্জ নামে দুটো করে সাবগ্রেড আছে। বুঝতেই পারছেন যে একই গ্রেডের অপেক্ষাকৃত বড় সাইজের গুলো লার্জ আর ছোটগুলোকে মিডিয়াম বলে। ছবিগুলো হাইরেজুলেশনের হওয়ায় পার্থক্যগুলো সহজেই চোখে পড়ছে। বাস্তবে খেয়াল করে না দেখলে সবগুলো গ্রেডই কালই লাগবে। লালচে আভাটা খেয়াল করে দেখলে চোখে পড়ে। সি গ্রেডেরগুলো সাইজে সবথেকে ছোট হয়।  এ+ গ্রেডের আজওয়া মদিনা, কুবা, উহুদ অঞ্চলে বেশি উতপাদিত হয়। এ+ গ্রেডটা মূলত প্রিমিয়াম গ্রেড৷ এটা আমার জানামতে বাংলাদেশে আসে না। প্রিমিয়াম, স্পেশাল বলে সাধারণত এ গ্রেড বা বি গ্রেড বিক্রি করে।



আজওয়া খেজুর ৫০০ থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা কেজিরও বাজারে আছে। আশা করি আপনার বাজেটে সবথেকে ভালমানের খেজুরটি বাছাই করে নিতে সক্ষম হবেন।  যে গ্রেডগুলো বললাম এদের মধ্যেও আরো ভাগ হয় উৎপাদনস্থলের উপর ভিত্তি করে। 


আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে মেয়াদ। নতুন খেজুর, পুরনো খেজুরের পার্থক্য হলো মেয়াদোর্ত্তীর্ণ খেজুর ভেজা ভেজা লাগবে। ৩/৫কেজির ইনটেক কার্টন কিনলে কার্টনের গায়েই মেয়াদ পাবেন। মেয়াদ ৩ বছর দেয়া থাকলেও আসলে দেড়বছরের মধ্যে খাওয়া উত্তম। আর বাসায় ফ্রিজে রেখে খেজুর খেতে পারেন।


ভিআইপি, স্পেশাল, প্রিমিয়াম এগুলা আমাদের স্থানীয় সাপ্লাইয়ার, বিক্রেতাদের দেয়া নাম। এই নামগুলো তারা তাদের নিজস্ব প্যারামিটারে দেন, তাই এসব নাম দেখে খেজুরের গ্রেড কোনটি তা নির্ধারণ করা যায় না। আশা করি পোষ্টটি পরে আপনারা কোন গ্রেডের খেজুর কিনছেন তা ধরতে পারবেন। 


আশা করি মানসম্মত আজওয়া খেজুর খুঁজে পেতে এই লেখাটি আপনাকে সাহায্য করবে। খেজুর নিয়ে কিছু জানার থাকলে বা জানানোর থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন। এতে করে সবাই উপকৃত হবে ইনশাল্লাহ। ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় কমেন্টের রিপ্লাই করতে কিছুটা দেরি হতে পারে, তবে আমি চেষ্টা করবো প্রতিটি কমেন্টে রিপ্লাই দেয়ার জন্য। 

কমেন্টে প্লিজ নিজের পণ্যের বিজ্ঞাপন বা ফোন নাম্বার দিবেন না। বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে ইমেইল করুন- muhammadrajib44@gmail.com আপনার পণ্য মানসম্মত হলে লেখাটি স্পনসর করতে পারবেন এবং লেখাটিতে বিজ্ঞাপন যোগ করে দেয়া হবে। ধন্যবাদ। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ওভেন কেনা নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা

চায়ের গ্রেড

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভ্রমন বৃত্তান্ত